শ্রীশ্রী ঠাকুরের বাণী: দিন দিন সংসারের সমস্যা কঠিন হইতে কঠিনতর হইয়া পড়িতেছে।
সংসারের কষ্ট: বর্তমান দুর্দিনের বাস্তব চিত্র
আজকের যুগে সাধারণ মানুষের কষ্টের যেন অবধি নাই। কেউ অন্নের জন্য চিন্তিত, কেউ কর্মহীনতার জন্য, কারও মনে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার ভয়। এই সমস্ত কষ্টের মাঝেই মানুষ প্রশ্ন করে—এই দুর্দিন কি কখনও কাটিবে না? গুরুবাণী বলিতেছে, এই দুঃসময়ও এক প্রকার পরীক্ষা, যাহা পার হইলেই ভাবী মঙ্গলের সোনালী ভোর উদিত হইবে।
ভাবী মঙ্গলের সুবাতাস: ভবিষ্যতের মঙ্গল আসিবার পূর্বলক্ষণ
এই সমস্ত সংকটের মাঝেই ভাবী মঙ্গলের সুবাতাস বহিতে সুরু হইয়াছে। ভবিষ্যতে সকল দিকেরই মঙ্গল হইবে—এই ইঙ্গিত ধীরে ধীরে স্পষ্ট হইতেছে। অর্থনৈতিক স্বস্তি, অন্ন-বস্ত্রের সহজলভ্যতা, কাজের সুযোগ বৃদ্ধি, মানসিক প্রশান্তি—সব বিষয়ে সুবিধা হইবে, তাহার সূচনা ইতিমধ্যেই দেখা যাইতেছে।
গুরুবাণীর ভাষায়, দুর্দিন স্থায়ী নহে। পরিস্থিতি যতই কঠিন হউক, ভগবানের ইচ্ছায় ও সদগুরুর কৃপায় এক সময় শুভদিন আসিবেই। এই বিশ্বাসই আমাদের অন্তরে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা জাগ্রত রাখে।
ভগবানের মঙ্গল-আশীর্বাদ: অন্নসমস্যা দূর হইবার প্রতিশ্রুতি
অচিরেই ভগবানের মঙ্গল-আশীর্বাদ উদ্ভাসিত হইবে—গুরুবাণীর এই আশ্বাস সাধারণ হৃদয়ে আশার আলো জ্বালাইয়া দেয়। তখন সাধারণের অন্নসমস্যাও পূরণ হইবে, কষ্টের পরিবর্তে স্বস্তি ও নিরাপত্তা আসিবে। যাহারা আজ কষ্ট সত্ত্বেও ভগবানের উপর ভরসা রাখিয়া চলিতেছে, তাহারাই আগামী দিনের নব-সূর্য উদয় দেখিবে।
এই দুর্দিনে যাহারা টিকিয়া যাইবে, খাইয়া-পরিয়া কোনওরকমে বাঁচিয়া থাকিবে, তাহারাই দেশের পরিবর্তিত অবস্থা দেখিয়া ভবিষ্যতে উৎফুল্ল ও আনন্দিত হইবে। তাদের জীবনক্লান্তি দূর হইয়া, মুখে ফুটিয়া উঠিবে তৃপ্তির হাসি—“ভগবান আমাদের কষ্ট বিফলে যাইতে দেন নাই।”
দুর্দিনে টিকে থাকার পুরস্কার: নব-সূর্যোদয়ের আনন্দ
গুরুবাণী আমাদের শিক্ষা দেয়, যে দুর্দিনে স্থির থাকে, সেই শুভদিনে আসন পায় সম্মানের। আজকের কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাহারা সততা, ধৈর্য, পরিশ্রম ও ভক্তি বজায় রাখিবে, ভবিষ্যতে সমাজের উন্নত অবস্থায় তাহারাই হইবে প্রকৃত আনন্দভোগী। দেশের অবস্থার উন্নতি, অন্ন-বস্ত্রের স্বস্তি, মানুষের মধ্যে মানবতা ও ন্যায়বোধের পুনরুত্থান—সব মিলিয়া এক নতুন যুগের সূচনা হইবে।
সদগুরুর কৃপা ও চিত্তশুদ্ধি: ভগবানের আবির্ভাবের প্রত্যক্ষ অনুভব
যাহারা সদগুরুর কৃপা ও চিত্তশুদ্ধির গুণে ভগবানের আবির্ভাব অন্তরে প্রত্যক্ষ অনুভব করিবে, তাহাদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। তাহাদের কাছে সামান্য অন্ন-বস্ত্র, ধন-সম্পদ, জাগতিক কষ্ট—ইহা কিছুই বিশেষ অর্থ বহন করিবে না। তারা অন্তরের আনন্দে, ভগবত্প্রেম ও গুরুভক্তিতে এমনভাবে পরিপূর্ণ থাকিবে যে, এই সব জাগতিক দুঃখ-কষ্ট তাদের মনকে স্পর্শ করিবে না।
তাদের জীবনে আত্মিক শান্তি, অন্তরের মঙ্গল, ভক্তি ও সেবার আনন্দই হইবে প্রকৃত সম্পদ। আনন্দলাভের জন্য তাহারা বাহ্য জগতের উপর নির্ভর করিবে না; ভগবানের সান্নিধ্যই তাহাদের কাছে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হইয়া উঠিবে।
দুর্দিন থেকে শুভদিনে পৌঁছাবার পথ: আমাদের করণীয়
গুরুবাণী ও আধ্যাত্মিক দর্শন অনুসারে, এই দুর্দিন কাটাইয়া শুভদিনে পৌঁছাইতে আমাদের করণীয় কিছু বিষয়—
- ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা ধারণ করা, হতাশায় ভেঙে না পড়া
- সদগুরুর বাণী ও ভগবানের কৃপায় দৃঢ় ভরসা রাখা
- সৎপথে অটল থাকা, অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে আপস না করা
- নিজের ও পরিবারের চিত্তশুদ্ধি, চরিত্রগঠন ও ভক্তिभাব বৃদ্ধি করা
- সম্ভবপর্যন্ত অন্যের উপকার করা, দুঃখী ও অভাবগ্রস্তের পাশে দাঁড়ানো
উপসংহার: দুর্দিনের পরে সত্যিই শুভদিন
আজকের এই কঠিন সময় আমাদের শিক্ষা দেয়—মানুষের ভরসা পরিবর্তনশীল জগতে নয়, অপরিবর্তনীয় ভগবানের কৃপায়। দুর্দিনের পরে শুভদিন আসিবেই—এই বিশ্বাসই আমাদের জীবনসংগ্রামের প্রধান শক্তি। ভগবানের মঙ্গল-আশীর্বাদ, সদগুরুর কৃপা এবং আমাদের নিজস্ব সৎচেষ্টা মিলিয়া একদিন সকল দুঃখ-কষ্ট দূর হইয়া মঙ্গল, শান্তি ও সমৃদ্ধি নেমে আসিবে আমাদের জীবনে।
সম্পর্কিত লেখা: বৎস! সম্মুখে স্নিগ্ধ আলো বিকশিত – জড়তা ভেঙে জেগে ওঠার আহ্বান