Dinosaur
Posts

রোগ মুক্তি – নরেশদার অভিজ্ঞতা এবং ঠাকুরের দীক্ষা

 

নরেশদা দীর্ঘ ১৭ বছর রোগে ভুগে মৃত্যুর প্রান্তে, কিন্তু ঠাকুরের কৃপায় আরোগ্য লাভ করলেন। 

পড়ুন তার চমকপ্রদ রোগমুক্তির কাহিনী ও দীক্ষার অভিজ্ঞতা।


রোগ মুক্তি – নরেশদার অভিজ্ঞতা

১৭ বছর বয়সে নরেশদার এক অদ্ভুত রোগ হল। তিনি ছিলেন রামমূর্তির চেলা এবং নামকরা পালোয়ান। লোহার চেন ছিড়তেন বুক দিয়ে। একদিন সেই কাজ করতে গিয়ে বুকে মারাত্মক আঘাত লেগে হৃদযন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হল। মুখ দিয়ে রক্ত ওঠা দিন কয়েক পরে বন্ধ হলেও সব সময় আভ্যন্তরীণ রক্তপাত চলত। কোন ডাক্তার তাঁকে সুস্থ করতে পারলেন না।

নরেশদা ক্রমে শয্যাশায়ী ও অস্থিকঙ্কালসার হয়ে গেলেন। ফলের রস ছাড়া অন্য কিছু তার হজম হতো না। বছর ঘুরতে ঘুরতে, উত্থানশক্তিহীন নরেশদা প্রায় ৪–৫ বছর রোগে ভুগে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতে লাগলেন।

দৈবিক সাহায্যের সন্ধান

চিকিৎসকেরা যখন নরেশদার জীবনের আশা ত্যাগ করলেন, তখন মনে হল, এবার দৈব ছাড়া পথ নাই। তিনি এক মহাপুরুষের কৃপায় আরোগ্য লাভ করতে চাইলেন। গোপনে বন্ধুর কাছে চিঠি লিখে জানালেন, ঠাকুর আলিপুরদুয়ারে রয়েছেন।

পৌষ মাসে, উত্তর বাংলায় হাড় কাঁপানো শীতে, দুইবার ট্রেন বদল করে অস্থিচর্মসার নরেশদা শেষ পর্যন্ত আলিপুরদুয়ারে পৌঁছালেন। স্টেশনে তাকে নিতে আসা লোক তাঁকে চিনতে না পারায় ফিরে যায়, কিন্তু এক ভদ্রলোকের দয়ায় তিনি গাড়িতে উঠে গন্তব্যে পৌঁছালেন।

ঠাকুরের আশীর্বাদ ও আরোগ্য

ঠাকুরের সঙ্গে দেখা হলে নরেশদা পায়ের কাছে বসে কষ্টে-সৃষ্টে প্রণাম করলেন। ঠাকুর সদয় কণ্ঠে বললেন, "এখন বিশ্রাম করোগে।" নরেশদার চেহারা দেখে উপস্থিত ভক্তদের চোখ ছলছল করল। তিনি ধীরে ধীরে ঠাকুরের আশীর্বাদ গ্রহণ করলেন।

বেলা দুইটা নাগাদ নরেশদাকে প্রসাদ নেওয়ার জন্য বলা হলো। এক থালা খিচুড়ি, নানারকম ভাজা পিঠা, পায়েস ও ঘি — যা তার জন্য রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ফলের রস ছাড়া কিছু খাওয়া যায়নি এমন নরেশদা বিনা তর্কে খেতে শুরু করলেন। প্রসাদ হজম করে তার শরীরে আশ্চর্যজনক আরোগ্য ঘটল।

দীক্ষা গ্রহণ এবং দীর্ঘায়ু

আলিপুরেই নরেশদা ঠাকুরের কাছে দীক্ষা পেলেন। দীক্ষাদানের পর ঠাকুর তাঁর মাথা টেনে কপালখানায় স্পর্শ করে বললেন, "যাও, নিশ্চিন্তে সংসার করগে। সব ভার আমার উপর রইল।" নরেশদা সেই মুহূর্তে অনুভব করলেন যেন তাঁর সর্বাঙ্গে বিদ্যুৎ খেলে গেল। দীক্ষা গ্রহণের পর নরেশদা আরও ৬০ বছর জীবিত ছিলেন।

উৎস: Facebook Source