জয়গুরু ঠাকুরের চিঠি
কল্যাণীয়াসু,
পরম শুভাশীষাং রাসয় সন্তু নিত্যম্।
মা শঙ্করী! তোমার পত্র পাইয়া সকল সমাচার অবগত হইলাম। দীক্ষা গ্রহনের পর যে স্পন্দন অনুভব করিতে, তাহা গুরুশক্তির প্রভাব। এখন আর তাহা অনুভব না করিলেও সময়ে আবার অনুভূত হইবে — তবে একটু সময়-সাপেক্ষ।
সখীদের ন্যায় যুগলরূপের কুঞ্জসেবা করিতে তোমার কোন বাধা নাই। স্বচ্ছন্দে করিতে পার। হৃদয়ে ইষ্টদেবতার এবং মস্তকে গুরুদেবের মানসপূজা করিয়া জপ করিও; তাহাতে কোন দোষ হইবে না। আর কোনদিন সময়াভাবে বেশি জপ করিতে না পারিলে দশবার করিতে তো এখানে থাকিতেই আদেশ দিয়াছি।
মা! তোমার পত্রখানা পড়িয়া পরম প্রীতি লাভ করিয়াছি। কাহারও ভাল-মন্দ কথায় কান দিও না। সাংসারিক আবিলতায় বেশি মিশিও না। আপনভাবে আপনমনে থাকিতে চেষ্টা করিও। কেহ কাহারও নহে — একা আসিয়াছ, একা যাইতে হইবে, এ কথা সর্বদা স্মরণ করিও।
পার্থিব বস্তুর আসক্তিতে মোহগ্রস্থ হইও না। সম্পদে-বিপদে, রোগে-শোকে, সুখ-দুঃখে সর্বাবস্থায় সেভাবে থাকিয়া ভগবানের নাম করিবে। শরণাগতভাবে ভগবানে আত্মসমর্পণ করিতে অভ্যাস করিবে। সকল সময় তাহার জয় গাহিবে, গুনগান করিবে।
তাঁহার অপেক্ষা আপনার কেহ নাই। তাঁহার মত স্নেহ দয়া কাহারও নাই; তাঁহার মত কেহ ভালবাসে না। পিতা-মাতার স্নেহ, স্বামীর প্রেম — একমাত্র তাঁহারই স্নেহ-প্রেমের কণা। সুতরাং তাহাকে ভুলিয়া পার্থিব ভাবে মুগ্ধ হইও না। স্বামী-পুত্রের সেবাও তাঁহার সেবা জ্ঞান করিবে।
কাহাকেও হিংসা, নিন্দা বা ঘৃণা করিও না — সবই যে তাঁহার বিকাশ! তিনি সবের সকল, সকলের সব — একথা বিশ্বাস করিও। তবেই একদিন তাঁর প্রেমের অধিকারিণী হইয়া নারী-জন্ম সার্থক করিতে পারিবে।
আমার শরীর এখন ভাল আছে। ☆ ☆ ☆ অন্যান্য কুশল। তোমরা আমার আশীর্বাদ জানিবে।
ইতি —
শুভানুধ্যায়ী,
শ্রীনিগমানন্দ
🔖 সম্পর্কিত পোস্ট:
© নিগম দর্পণ | আধ্যাত্মিক প্রেরণার কেন্দ্র
